খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা

মাদারীপুরে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ১০

গেজেট ডেস্ক 

মাদারীপুর সদর উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কমপক্ষে ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এতে ভোটারদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে ৯৫ নম্বর বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিতে আসেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী আসিবুর রহমান খানের অনুসারী এনামুল হাওলাদার ও তার লোকজন। এ সময় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী পাভেলুর রহমান খানের অনুসারী আজাদ হাওলাদার তাদের বাঁধা দিতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কমপক্ষে ১০টি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে একজন সাধারণ ভোটারসহ আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন।

বোমা হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে এক স্থানীয় ভোটার আহত হয়েছেন। তাঁর নাম বাদশা হাওলাদার (৬০)। তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় মাদারীপুরের ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানার ওসি এসএম সালাউদ্দিন জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পরে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। ভোটগ্রহণ চলছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল হাসান বলেন, ভোটকেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের উত্তেজনা থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। বালিয়া সড়কের দুই প্রান্তে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ, বিজিবিসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ভোটকেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আল রেজাই রাব্বি বলেন, ‘কেন্দ্রের বাইরে ৫০ থেকে ৬০টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বোমাবাজির পরে ভোটাররা আতঙ্কে আছেন। এ কারণে প্রায় এক ঘণ্টা ভোটার উপস্থিতি কমে যায়। বেলা ১১টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট সংঘর্ষ চলে। বোমাবাজির পরে ভোটার ও আমাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’ তিনি বলেন, শুরুতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটলেও এর কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টির মতো বোমাবাজি শুরু হয়। তবে কেন্দ্রের ভেতরে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।

বালিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী শাকিল শেখ বলেন, ‘দুই পক্ষ প্রথমে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু করে। পরে একের পর এক ককটেল ফাটানো হয়। মুহূর্তেই ভোটকেন্দ্রের মানুষজন ভয়ে দূরে সরে যায়। সবাই আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন পুলিশ সুপার মাসুদ আলম ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান। পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘আনারস ও মোটরসাইকেল প্রতীকের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও বোমাবাজি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত। আপাতত কোনো ঝামেলা নেই। ফের সংঘর্ষ এড়াতে এখানে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে সকাল আটটায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ। মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ২৮৩ দশমিক ১৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার জন। নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২১। আর পাঁচজন আছেন অন্যান্য ভোটার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সদর উপজেলার ১১৭টি ভোটকেন্দ্রের সব কটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছেন।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!